লিঙ্ক: বাংলার ইতিহাস: প্রাচীন আমল- ২ (মৌর্য সাম্রাজ্য থেকে স্বাধীন সুলতানী আমল)
মোঘল আমল
মোঘল বংশের প্রতিষ্ঠাতা- জহির উদ্দীন মুহম্মদ বাবর (১৫২৬ খ্রিস্টাব্দ)
বাবর (জহির উদ্দীন মুহম্মদ বাবর)
১৫২৬ সালে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদীকে পরাজিত করে মোঘল বংশ প্রতিষ্ঠা করেন বাবর- তুর্কি শব্দ; অর্থ- বাঘ
বাবরের আত্মজীবনী- তুযুক-ই-বাবর, বাবুরনামা
বাবরের কবর- আফগানিস্তানের কাবুলে
হুমায়ুন (নাসিরউদ্দীন মুহম্মদ হুমায়ুন)
হুমায়ুন শেরশাহের নিকট পরাজিত হন
পরে আবার শেরশাহকে পরাজিত করেন
বাংলাকে ‘জান্নাতাবাদ’ বলে ঘোষণা করেন
গ্রন্থাগারের সিঁড়ি থেকে পরে মারা যান
[শুরী বংশ
শেরশাহ (শেরশাহ শুরী)
হুমায়ুনের শাসনামলে শেরশাহ হুমায়ুনকে পরাজিত করে কিছুদিনের জন্য বাংলাদেশ তথা গোটা ভারতের ক্ষমতা দখল করেন । শেরশাহ ১৯৪০-৪৫ পর্যন্ত ৫ বছর বাংলা শাসন করেন ।
শেরশাহ-
গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড তৈরি করেন
‘ঘোড়ার ডাক’ প্রচলন করেন
‘রূপিয়া’ ও ‘দাম’ মুদ্রা প্রচলন করেন
ইসলাম শাহ শুরী (আসল নাম- জালাল খান)
শেরশাহর মৃত্যুর পর তার পুত্র জালাল খান ইসলাম শাহ শুরী নাম নিয়ে সিংহাসনে বসেন । হুমায়ুন তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেও তাকে পরাজিত করতে পারেন নি । ইনি ১৯৪৫-৫৩ পর্যন্ত শাসন করেন । তারপর সিংহাসনে বসেন ফিরোজ শাহ শুরী । কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই তাকে গুপ্তহত্যা করে সিংহাসনে বসেন মুহাম্মদ মুবারিজ খান; তিনি মুহম্মদ শাহ আদিল নাম গ্রহণ করেন । তার পরবর্তী শুরী সম্রাটগণ হলেন-
ইব্রাহিম শাহ শুরী
সিকান্দার শাহ শুরী
আদিল শাহ শুরী
হুমায়ুন সিকান্দার শাহ শুরীকে পরাজিত করে পুনরায় মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন । এরপর সিকান্দার শাহর ভাই আদিল শাহ শুরী কিছুকাল দিল্লির পূর্বাঞ্চল শাসন করেন । পরবর্তীতে সিকান্দার শাহ ও আদিল শাহ যৌথভাবে হুমায়ুনের সঙ্গে যুদ্ধ করেন এবং পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে মোঘলদের কাছে শুরীদের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে ।]
আকবর (জালালউদ্দীন মুহম্মদ আকবর )
মোঘল সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ সম্রাট- আকবর
পুরো নাম- জহির উদ্দীন মুহম্মদ আকবর
দিল্লির সিংহাসনে বসেন- ১৩ বছর
‘আইন -ই-আকবরী’ গ্রন্থের রচয়িতা- আবুল ফজল
আকবরের অভিভাবক- বৈরাম খাঁ
আকবরের আমলে সমগ্র বাংলা পরিচিতি পায়- ‘সুবেহ বাঙ্গালা’
আকবর বাংলা বিজয় করেন- ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দ
বাংলা সন প্রবর্তন করেন (১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১১ এপ্রিল থেকে)
‘দ্বীন-ই-এলাহী’ নামে একটি ধর্ম প্রবর্তন করেন
মনসবদারী প্রথা প্রচলন করেন
জিজিয়া কর ও তীর্থকর রহিত করেন
রাজপুত নীতি প্রবর্তন করেন
‘বুলন্দ দরওয়াজা’ নির্মাণ করেন
অমৃতস্বর স্বর্ণমন্দির নির্মাণ করেন
আকবরের রাজসভার-
সঙ্গীতজ্ঞ- তানসেন
কৌতুককার- বীরবল
ইতিহাসে বিখ্যাত- ‘মহামতি আকবর’ নামে
মৃত্যুবরণ করেন- ১৬০৫ খ্রিস্টাব্দে
জাহাঙ্গীর (নূরউদ্দীন মুহম্মদ জাহাঙ্গীর)
প্রকৃত নাম- সেলিম
জাহাঙ্গীরের স্ত্রী- নূরজাহান (প্রকৃত নাম- মেহের-উন-নিসা)
আগ্রার দূর্গ নির্মাণ করেন
জাহাঙ্গীরের আমলে বাংলার সুবেদার ছিলেন- ইসলাম খান
ইসলাম খান (জাহাঙ্গীরের আমলে বাংলার সুবেদার)
ঢাকাকে বাংলার রাজধানী করেন (প্রথমবারের মতো) (১৬১০ সালে)
ঢাকার নাম রাখেন- জাহাঙ্গীরনগর
দোলাই খাল খনন করেন (বুড়িগঙ্গার পূর্বনাম- দোলাই খাল/নদী)
ইসলাম খান বার ভূঁইয়াদের দমন করে বাংলাকে মোঘল সাম্রাজ্যে অন্তর্ভূক্ত করেন
শাহজাহান (শাহাবউদ্দীন মুহম্মদ শাহজাহান)
ময়ূর সিংহাসন নির্মাণ করেন (শিল্পী- বেরাদল খান)
ময়ূর সিংহাসন লুট করেন- পারস্যের সম্রাট নাদির শাহ (এখন ইরানে/পারস্যে আছে)
তাজমহল নির্মাণ করেন (শিল্পী- ওস্তাদ ঈশা খাঁ)
তাজমহল- আগ্রা (যমুনা নদীর তীরে)
তাজমহল নির্মাণে ২০ হাজার কারিগর ২২ বছর কাজ করেন
তাজমহল নির্মাণে ব্যয় হয়- ৩ কোটি টাকা
তাজমহল নির্মাণ করেন- স্ত্রী মমতাজের স্মৃতিতে
দেওয়ান-ই-আম নির্মাণ করেন
দেওয়ান-ই-খাস নির্মাণ করেন
সালমার উদ্যান নির্মাণ করেন
লাল কেল্লা নির্মাণ করেন (ভারতের দিল্লীতে)
আওরঙ্গজেব (মহীউদ্দীন মুহম্মদ আওরঙ্গজেব আলমগীর)
আওরঙ্গজেবের আমলে বাংলার শাসনকর্তা ছিলেন- শায়েস্তা খান
শায়েস্তা খানের সময়- টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যেতো
শায়েস্তা খান চট্টগ্রামের নাম রাখেন- ইসলামাবাদ
আওরঙ্গজেবের আমলে বাংলার আরেক শাসনকর্তা- মীর জুমলা
মীর জুমলার কামান- ওসমানী উদ্যানে সংরক্ষিত
মীর জুমলার কামানটি ব্যবহৃত হয়েছিল- আসাম যুদ্ধে
ঢাকা গেট তৈরি করেন- মীর জুমলা
মোঘল সাম্রাজ্যের পরবর্তী দুর্বল শাসকগণ
শেষ মোঘল সম্রাট- দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ
দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে নির্বাসন দেয়া হয়- রেঙ্গুনে (বর্তমানইয়াঙ্গুনে)
শেষ মোঘল সম্রাটদের ক্রম-
প্রথম বাহাদুর শাহ> জাহান্দার শাহ> ফররুখশিয়র> রাফি উদ-দৌলত*> নিকুশিয়র> মুহম্মদ ইব্রাহিম> মুহম্মদ শাহ> আহমেদ শাহ বাহাদুর> দ্বিতীয় আলমগীর> তৃতীয় শাহজাহান> দ্বিতীয় শাহ আলম> দ্বিতীয় আকবর শাহ> বাহাদুর শাহ জাফর**
* রাফি উদ-দৌলতের আরেক নাম- দ্বিতীয় শাহজাহান
** বাহাদুর শাহ জাফরের আরেক নাম- দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ
সংক্ষেপে মোঘল আমল
সম্রাট |
অবদান |
বাংলার সুবাদার / শাসনকর্তা |
||
বাবর |
প্রতিষ্ঠাতা আত্মজীবনী- তুযুক-ই-বাবর, বাবুরনামা কবর- আফগানিস্তানের কাবুলে |
|||
হুমায়ুন |
||||
[ শূরী বংশ ] শেরশাহ- গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড তৈরি, ‘ঘোড়ার ডাক’ প্রচলন |
||||
আকবর |
মোঘল সম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ সম্রাট বাংলা সন প্রবর্তন জিজিয়া কর ও তীর্থকর রহিত মনসবদারী প্রথা প্রচলন ‘বুলন্দ দরওয়াজা’ নির্মাণ অমৃতস্বর স্বর্ণমন্দির নির্মাণ |
|||
জাহাঙ্গীর |
আগ্রার দূর্গ নির্মাণ |
ইসলাম খান ঢাকাকে বাংলার রাজধানী করেন (প্রথমবারের মতো) (১৬১০ সালে) ঢাকার নাম রাখেন জাহাঙ্গীরনগর |
||
শাহজাহান |
ময়ূর সিংহাসন নির্মাণ তাজমহল নির্মাণ তাজমহল- আগ্রা দেওয়ান-ই-আম দেওয়ান-ই-খাস লাল কেল্লা নির্মাণ করেন (ভারতের দিল্লীতে) |
|||
আওরঙ্গজেব |
শায়েস্তা খান শায়েস্তা খানের সময়- টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যেতো চট্টগ্রামের নাম রাখেন ইসলামাবাদ মীর জুমলা ঢাকা গেট তৈরি মীর জুমলার কামান- ওসমানী উদ্যানে সংরক্ষিত |
|||
মোঘল সাম্রাজ্যের পরবর্তী দুর্বল শাসক ও পতন |
||||
দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ |
শেষ মোঘল সম্রাট রেঙ্গুনে নির্বাসিত |
|||
বার ভূঁইয়া
বার ভূঁইয়াদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিলেন- ঈশা খাঁ
ইশা খাঁর রাজধানী- সোনারগাঁও
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ- কন্দর্প নারায়ণ (চন্দ্রদ্বীপ/বরিশাল), কংস নারায়ণ (নাটোর)