প্রাথমিক কথা
এ অধ্যায়টি ছোট, আর এখান থেকে সাধারণত প্রশ্ন আসেই। সাধারণ কনসেপ্ট থেকেই প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি, কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। আর কিছু জিনিস যথারীতি মনে রাখতেই হবে।
অধ্যায় সারবস্তু
১. ভাইরাস একটি ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ বিষ। (মানুষ আগে জানতো না যে কেন ভাইরাল রোগ হয়, তাই বিষ মনে করতো, যদিও ভাইরাস আসলে তা না।)
২. ১৮৯২ সালে সর্বপ্রথম ভাইরাসের উপস্থিতি প্রমাণ করেন আইভানোভস্কি, তামাকের মোজাইক ভাইরাস। (তখন ব্যাকটেরিয়ার কথা মানুষ জানতো, কিন্তু তিনি দেখেন যে এই জীবটা ঠিক ব্যাকটেরিয়া না, অন্য কিছু।)
৩. ১৯৩৫ সালে স্ট্যানলি প্রথমবারের কোন ভাইরাস হিসেবে তামাকের মোজাইক ভাইরাসকে কেলাসিত করতে সক্ষম হন। ১১ বছর পর ১৯৪৬ সালে তিনি এ জন্য নোবেল পুরষ্কার পান।
৪. ভাইরাস-এ প্রোটিন আবরণীর ভিতরে নিউক্লিক এসিড থাকে।
৫. আকৃতি অনুসারে বেশ কিছু ভাগে (৫ ভাগ) কিন্তু নিউক্লিক এসিডের ধরণ অনুযায়ী ভাইরাস দু’ভাগে ভাগ করা হয়:
যথা: ডিএনএ (DNA) ভাইরাস এবং আরএনএ (RNA) ভাইরাস।
৬. আকৃতি অনুযায়ী ভাইরাসের শ্রেণিবিন্যাস:
(এখান থেকে অবজেকটিভ আসার সম্ভাবনা কম, তবুও এসে যেতে পারে, তাই গুরুত্বপূর্ণ গুলো জেনে রাখা ভালো।)
ক. দণ্ডাকার: টোবাকো মোজাইক ভাইরাস (যে ভাইরাসটি নিয়ে প্রাথমিক গবেষণা হয়েছিল।)
খ. গোলাকার: পোলিও, ডেঙ্গু, এইডস এর HIV ভাইরাস। (খুব ভয়াবহ ও পরিচিত রোগ সমূহ)
গ. ব্যাঙাচি আকার: T2 ফায ভাইরাস। (TMV এর সাথে যেন না মিলে যায়, T2 ভাইরাস অনেকটা এলিয়েন শিপ-এর মত)
ঘ. ডিম্বাকার: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস।
ঙ. পাউরুটির মত: ভ্যাক্সিনিয়া ভাইরাস।
৭. RNA ভাইরাস ও DNA ভাইরাসের পার্থক্য:
ক. RNA ভাইরাস সাধারণত উদ্ভিদে রোগ সৃষ্টি করে, আর DNA ভাইরাস সাধারণত প্রাণীকে আক্রমণ করে। যদিও প্রাণীতেও অনেক RNA ভাইরাস রোগ সৃষ্টি করে।
খ. RNA ভাইরাস দণ্ডাকার বা সূত্রাকার, কিন্তু DNA ভাইরাসের অন্যান্য সব আকৃতি।
গ. RNA ভাইরাস একসূত্রক, এবং DNA ভাইরাস দ্বিসূত্রক। (RNA সাধারণত একসূত্রক হয়, আর DNA দ্বিসূত্রক)
৮. সংক্রমনক্ষম ভাইরাসকে ভিরিয়ন বলে। (প্রশ্নের অপশনে ভিরয়েড টার্ম টা থাকলে কনফিউশন হতে পারে। ভিরয়েড হচ্ছে কেবল নিউক্লিক এসিড, যার প্রোটিন আবরণ নেই, আবার প্রিয়ন হল এমন প্রোটিন আবরণ, যার মাঝে নিউক্লিক এসিড নেই। প্রোটিনের জন্য প্রিয়ন, আর নিউক্লিক এসিড থাকার জন্য ভিরয়েড, দুই মিলে ভিরিয়ন, যেখানে প্রোটিন আবরণও আছে, আবার ভেতরে নিউক্লিক এসিডও আছে)
৯. বাইরের প্রোটিন আবরণকে ক্যাপসিড বলা হয়। (নিউক্লিক এসিডের ক্যাপ)
১০. ক্যাপসিডের স্তরের অ্যান্টিজেনিক বৈশিষ্ট্য আছে। (এন্টিজেনিক বৈশিষ্ট্য থাকার জন্য আমাদের শরীরে অ্যান্টিবডি সৃষ্টি হতে পারে। এই এন্টিজেনিক বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে যেমন পোলিও রোগের টিকা দেওয়া হয়, ফলে আমাদের দেহে আগে থেকেই পোলিও রোগের বিরূদ্ধে অ্যান্টিবডি থাকে।)
১১. যে ভাইরাসের সংক্রামণ ক্ষমতা নেই, কিন্তু নিউক্লিক এসিড ও ক্যাপসিড, দু’টোই থাকে, তাকে নিউক্লিওক্যাপসিড বলে।
১২. একই ভাইরাসে হয় RNA নয়তো DNA অবস্থান করে, কিন্তু দু’টোই একসাথে অবস্থান করে না।
১৩. গবাদি পশুর ফুট এন্ড মাউথ রোগ-এর ভাইরাস সবচেয়ে ছোট, সবচেয়ে বড় ভাইরাস ভ্যারিওলা।
১৪. TMV ভাইরাস দণ্ডাকার, এটি একসূত্রক RNA বহন করে।
১৫. ভ্যাক্সিনিয়া ভাইরাস এর মধ্যে DNA থাকে, বাইরে চর্বিজাতীয় পদার্থের আবরণ রয়েছে।
১৬. T2 ফায এর নিউক্লিক এসিড দ্বিসূত্রক DNA, দেহ দু’টি অংশে ভাগ করা যায়: মাথা ও লেজ ।
১৭. HIV ভাইরাসে একসূত্রক দু’টি RNA এবং দু’টি রিভার্স ট্রান্সক্রিপ্টেজ থাকে। (রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ এর কাজ হচ্ছে যে RNA থেকে রিভার্স করে যে DNA-এ তে পরিণত করা।)
১৮. HIV ভাইরাস মানবদেহের শ্বেতকণিকার ম্যাক্রোফাজ ও T-cell কে ধ্বংস করে।
১৯. ক্যাপসিডের বাইরে দ্বিস্তরী লিপিড থাকে, যাকে গ্লাইকোপ্রোটিন বলে।
২০. এবিওলা ভাইরাসের আক্রমণে দেহের কোষ ফেটে যায়, আফ্রিকায় মহামারীরূপে এই রোগ হয়।
২১. BMV=Bean (সিম) Mosaic Virus
২২. টুংগ্রো ভাইরাসের পোষক দেহ ধান।
২৩. বসন্ত এর জন্য ভ্যারিওলা ভাইরাস দায়ী আর হামের জন্য রুবিওলা ভাইরাস দায়ী। (ভ্যারিওলা বৃহত্তম ভাইরাস, “ব” দিয়ে তেমন “বসন্ত”, এভাবে দু’টো ভাইরাস, ভ্যারিওলা ও রুবিওলা সৃষ্ট রোগের মধ্যে কনফিউশন দূর করা যায়)
২৪. লাল টিউলিপ ফুলে সৌন্দর্যমণ্ডিত সাদা দাগ হবার জন্য দায়ী ভাইরাস।