প্রাথমিক কথা:

এ অধ্যায়টিও ছোট। কিছু উদাহরণ মনে রাখা প্রয়োজন। কিছু ক্ষেত্রে ভাইরাসের সাথে কনফিউশন হতে পারে পরীক্ষার সময়। E. coli এর বিভিন্ন অঙ্গাণুর কাজ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন।

 

অধ্যায় সারবস্তু:

১. প্রোক্যারিওটা সুপার কিংডমের সবাই আদিকোষী, এদের নিউক্লিয়াস, মাইটোকন্ড্রিয়া, গলগি বডি, ইত্যাদি নেই, যা ইউক্যারিওটা সুপার কিংডমে রয়েছে।

২. ১৬৭৫ সালে লিউয়েনহুক প্রথম ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। (যিনি মাইক্রোস্কোপ-এর অনেক উন্নতি সাধন করেন। ওটা দিয়ে দেখতে গিয়েই আবিষ্কার করেন।)

৩. এরা দ্বিবিভাজন প্রক্রিয়ায় সংখ্যাবৃদ্ধি করে। তবে কিছু কিছু প্রজাতি এন্ডোস্পোর তৈরি করে যা প্রতিকূল পরিবেশে বংশবৃদ্ধিতে সহায়ক।

৪. ব্যাকটেরিয়ার প্রায় দু’হাজার প্রজাতি আবিষ্কৃত।

৫. ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীরের বাইরে ক্যাপসুল রয়েছে যা পলিস্যাকারাইড বা পলিপেপটাইড দিয়ে গঠিত।

৬. কোষপ্রাচীরের প্রধান উপাদান মিউকোপেপটাইড। (মিউকোপেপটাইড হল পেপটিডোগ্লাইকেন-এর প্রতিশব্দ। প্রোটিনের ভগ্নাংশ কে পেপটাইড বলে, গ্লুকোজ জাতীয় অণু থেকে গ্লাইকেন।)

৭. রাইবোসোম প্রোটিন তৈরি করে। (বলা যায় এটি হল প্রোটিন ফ্যাক্টরী, যার কাঁচামাল আসে DNA থেকে।)

৮. তরুণ ব্যাকটেরিয়ায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভলিউটিন থাকে, যা পরে কোষ গহবরে পরিণত হয়।

৯. ব্যাকটেরিয়ায় সুগঠিত ক্রোমোসোম নেই।

১০. ডি.পি.টি (ডিপথেরিয়া, পারটুসিস বা হুপিং কাশি, টিটেনাস বা ধনুষ্টংকার) রোগের প্রতিষেধক ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরি হয়।

(ভাইরাস দিয়ে বসন্ত, পোলিও, জলাতঙ্ক, হেপাটাইটিস-বি ইত্যাদি রোগের প্রতিষেধক তৈরি করা হয়।)

১১. Rhizobium ব্যাকটেরিয়া শিম জাতীয় উদ্ভিদের মূলের নডিউলে নাইট্রোজেন সংবন্ধন করে থাকে।

১২. Bacillus thuringiensis ব্যাকটেরিয়ার পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়।

(সংক্ষেপে bt বলা হয়, এই ব্যাকটেরিয়ার পতঙ্গরোধী প্রোটিনের জিন এখন গাছের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। যেমন আমরা যে সয়াবিন খাই, তা বেশিরভাগ bt সয়াবিন তেল, আরও রয়েছে bt ভুট্টা, bt তুলা, যা সারা বিশ্বে চাষ করা হয়ে থাকে। গবেষণার ক্ষেত্রে এই ব্যাকটেরিয়ার অনেক ব্যবহার রয়েছে।)

১৩. পাট শিল্পে Clostridium ব্যাকটেরিয়া বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

১৪. যক্ষ্মা, কলেরা, ডিপথেরিয়া, আমাশয়, ধনুষ্টংকার, নিউমোনিয়া, ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ।

(ভাইরাস জনিত রোগ হল: হাম, বসন্ত, পোলিও, ইনফ্লুয়েঞ্জা, জলাতঙ্ক ইত্যাদি)

১৫. খাদ্যে বিষক্রিয়ার জন্য দায়ী Clostridium botulin ব্যাকটেরিয়া, যারা বটুলিন নামক বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করে।

E.Coli:

১৬. E. coli এর কোষপ্রাচীর কাইটিন জাতীয় শর্করা এবং প্রোটিন দিয়ে গঠিত।

১৭. E. coli গ্রাম নেগেটিভ ধরনের। (গ্রাম পজিটিভ না নেগেটিভ, এই নিয়ে কনফিউশন হতে পারে, খেয়াল রাখা প্রয়োজন।)

১৮. নিউক্লিঅয়েডে একটি দীর্ঘ, প্যাচানো DNA অণু আংটির আকারে অবস্থান করে।

১৯. নিউক্লিওয়েড ছাড়াও DNA গঠিত একটি অঙ্গাণু আছে, যাকে প্লাজমিড বলে। অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জিন এখানে পাওয়া যায়।

২০. মেসোজোম ব্যাকটেরিয়ার শ্বসনে ভূমিকা রাখে।

২১. ফ্লাজেলা ব্যাকটেরিয়ার চলন অঙ্গ।

২২. পিলি দিয়ে পোষকদেহের সাথে নিজেকে আটকিয়ে রাখে।

২৩. E. coli মানবদেহে ভিটামিন B12, E ও K তৈরি করে। (এভাবে মনে রাখা যায়, E. coli একটি ব্যাকটেরিয়া, BEK ভিটামিন তৈরি করে।)

২৪. পানি ও খাবারে এদের উপস্থিতি প্রমাণ করে যে তা মল দ্বারা দূষিত । (বৃহদন্ত্রে E. coli ব্যাকটেরিয়া থাকে, খাদ্য বৃহদন্ত্র দিয়ে বের হবার সময় তাতে কিছু ব্যাকটেরিয়াও থাকে। তাই এদের উপস্থিতি দূষণ প্রমাণ করে।)

২৫. ভাইরাস কেলাসিত করলেও পরে সে আবার জীবনের লক্ষণ প্রকাশ করতে পারে, কিন্তু ব্যাকটেরিয়াকে কেলাসিত করলে কোষটি নষ্ট হয়ে যায়, তই আর জীবনের লক্ষণ প্রকাশ করে না।

সায়ানোব্যাকটেরিয়া: উদাহরণ: Nostoc, Anabaena

২৬. সায়ানোব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীর সেলুলোজ নির্মিত।

২৭. সি-ফাইকোসায়ানিন নীল কণিকা, সি-ফাইকোইরিথ্রিন লাল কণিকা। (ইরাইথ্রোসাইট কে লোহিত কণিকা বলে, সে ভাবে ইরিথ্রিন যে লাল কণিকা, তা মনে রাখা যেতে পারে।)

২৮. এদের দেহে সঞ্চিত খাদ্য গ্লাইকোজেন। (গ্লুকোজের পলিমার)

২৯. কিছু সায়ানোব্যাকটেরিয়া অন্য উদ্ভিদে এন্ডোফাইটিক (এন্ডো=ভেতরের দিক) হিসেবে জন্মে । যেমন Cycas-এর মূলের ভিতরে Nostoc, Anabaena জন্মে।

৩০. ছত্রাকের সাথে মিলিত হয়ে লাইকেন জাতীয় উদ্ভিদ তৈরি করে।

৩১. সায়ানোব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীর তিন স্তর বিশিষ্ট।

৩২. ক্রোমোপ্লাজমে ক্রোম বা রং তৈরি কারী উপাদান, যেমন ক্লোরোফিল, জ্যান্থোফিল, ক্যারোটিন ইত্যাদি থাকে। (যেমন, ক্লোমোজোম বলা হয় এর রং ধারণ করার ক্ষমতার জন্যই।)

৩৩. সেন্ট্রোপ্লাজমে সায়ানোব্যাকটেরিয়ার DNA ও RNA থাকে।

৩৪. সায়ানোব্যাকটেরিয়া ওয়াটার ব্লুম তৈরি করে পানিকে দূষিত করে।

৩৫. Nostoc-এর কোষপ্রাচীর ব্যাকটেরিয়ার মত মিউকোপেপটাইড বা গ্লাইকোপ্রোটিন দ্বারা গঠিত।

৩৫. Nostoc-এর কলোনীতে জিলেটিনের আবরণ থাকে।

৩৬. Nostoc নাইট্রোজেন গ্যাসকে সংবন্ধন করে মাটির উর্বরতা বাড়ায়।

৩৭. দেহসূত্র ভেঙ্গে সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটে বা অ্যাকিনিটি সৃষ্টির মাধ্যমে অযৌন জনন ঘটায়।