সংখ্যাবাচক শব্দ : সংখ্যা বলতে গণনার ধারণা বোঝায়।
যে সব শব্দ কোন বিশেষ্য পদ, অর্থাৎ কোন ব্যাক্তি বা বস্ত্ত বা কোন কিছুর সংখ্যার ধারণা প্রকাশ করে, তাকে সংখ্যাবাচক শব্দ বলে। যেমন- এক টাকা, দশটা গরম্ন, ইত্যাদি।
প্রকারভেদ : সংখ্যাবাচক শব্দ ৪ প্রকার-
১. অঙ্কবাচক সংখ্যা
২. পরিমাণ বা গণনাবাচক সংখ্যা
৩. ক্রম বা পূরণবাচক সংখ্যা
৪. তারিখবাচক সংখ্যা
১. অঙ্কবাচক সংখ্যা : কোন কিছুর সংখ্যা বা পরিমাণ অঙ্কে বা সংখ্যায় লিখলে তাকে বলে অঙ্কবাচক সংখ্যা। যেমন- ১ টাকা, ১০টি গরম্ন।
অর্থাৎ, অঙ্কবাচক সংখ্যা হলো- ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২ ইত্যাদি।
২. পরিমাণ বা গণনাবাচক সংখ্যা : কোন কিছুর সংখ্যা বা পরিমাণ অঙ্কে না লিখে ভাষায় লিখলে তাকে পরিমাণ বা গণনাবাচক সংখ্যা বলে। যেমন- এক টাকা, দশটি গরম্ন।
অর্থাৎ, পরিমাণ বা গণনাবাচক সংখ্যা হলো- এক, দই, তিন, চার, পাঁচ, ছয়, সাত, আট, নয়, দশ, এগারো, বার, ইত্যাদি।
পূর্ণসংখ্যার গুণবাচক সংখ্যা : পূর্ণসংখ্যার গুণবাচক সংখ্যা নিচে দেখানো হলো-
এক গুণ = এক্কে। যেমন- সাতেক্কে সাত
দুই গুণ = দু গুণে। যেমন- পাঁচ দু গুণে দশ
তিন গুণ = তিরিক্কে। যেমন- তিন তিরিক্কে নয়
চার গুণ = চার বা চৌকা। যেমন- চার চারে বা চৌকা ষোল
পাঁচ গুণ = পাঁচা। যেমন-পাঁচ পাঁচা পঁচিশ
ছয় গুণ = ছয়ে। যেমন- চার ছয়ে চবিবশ
সাত গুণ = সাতা। যেমন- তিন সাতা একুশ
আট গুণ = আটা। যেমন- আট আটা চৌষট্টি
নয় গুণ = নং বা নয়। যেমন- সাত নং তেষট্টি
দশ গুণ = দশং বা দশ। যেমন-দশ দশং একশ’
বিশ গুণ = বিশং বা বিশ। যেমন- তিন বিশং ষাট
ত্রিশ গুণ = ত্রিশং বা ত্রিশ। যেমন- তিন ত্রিশং নববই
পূর্ণসংখ্যার ন্যূনতা বা আধিক্য বাচক ‘সংখ্যা শব্দ’ : পূর্ণসংখ্যার চেয়েও কম বা বেশি বোঝাতে কিছু সংখ্যাবাচক শব্দ বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এগুলোও সংখ্যার নির্দিষ্ট ধারণাকে বোঝায়। এবং কোন সংখ্যার সাহায্যে না লিখে এগুলোকে ভাষায় ব্যবহার করা হয় বলে এগুলোও পরিমাণ বা গণনাবাচক শব্দ। যেমন-
(ক) ন্যূনতা বাচক সংখ্যা শব্দ
চৌথা, সিকি বা পোয়া = এক এককের চারভাগের এক ভাগ
তেহাই = এক এককের তিনভাগের এক ভাগ
অর্ধ বা আধা = এক এককের দুইভাগের এক ভাগ
আট ভাগের এক বা এক অষ্টমাংশ = এক এককের আটভাগের এক ভাগ
এরকম, চার ভাগের তিন বা তিন চতুর্থাংশ, পাঁচ ভাগের এক বা এক পঞ্চমাংশ, ইত্যাদি।
পোয়া = কোন এককের চার ভাগের তিন অংশকে তার পরবর্তী এককের পোয়া অংশ বলে। অর্থাৎ,
(খ) আধিক্যবাচক সংখ্যা শব্দ
সওয়া -
দেড় -আধা কম দুই -
আড়াই - আধা কম তিন -
৩. ক্রম বা পূরণবাচক শব্দ : একই সারি, দল বা শ্রেণীতে অবস্থিত কোন ব্যক্তি বা বস্ত্তর ক্রম বা পর্যায় বোঝাতে যে সংখ্যাবাচক শব্দ ব্যবহার করা হয়, তাকে ক্রম বা পূরণবাচক শব্দ বলে। যেমন- প্রথম ছেলে, দশম গরম্ন।
অর্থাৎ, ক্রম বা পূরণবাচক শব্দ হলো- প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, ইত্যাদি।
৪. তারিখবাচক শব্দ : বাংলা মাসের তারিখ বোঝাতে যে সংখ্যাবাচক শব্দ ব্যবহৃত হয়, তাদের তারিখবাচক শব্দ বলে। যেমন- পহেলা বৈশাখ, চৌদ্দই ফাল্গুন।
বাংলা তারিখবাচক শব্দের প্রথম চারটি (১-৪) হিন্দি নিয়মে গঠিত। বাকিগুলো অবশ্য বাংলার নিজস্ব নিয়মেই গঠিত হয়েছে।
নিচে একটি ছকের মাধ্যমে অঙ্কবাচক, পরিমাণ বা গণনাবাচক, ক্রম বা পূরণবাচক ও তারিখবাচক শব্দগুলো দেখানো হলো-
অঙ্ক বা সংখ্যা বাচক শব্দ |
পরিমাণ বা গণনা বাচক শব্দ |
ক্রম বা পূরণ বাচক শব্দ |
তারিখবাচক শব্দ |
১ |
এক |
প্রথম |
পহেলা |
২ |
দুই |
দ্বিতীয় |
দোসরা |
৩ |
তিন |
তৃতীয় |
তেসরা |
৪ |
চার |
চতুর্থ |
চৌঠা |
৫ |
পাঁচ |
পঞ্চম |
পাঁচই |
৬ |
ছয় |
ষষ্ঠ |
ছউই |
৭ |
সাত |
সপ্তম |
সাতই |
৮ |
আট |
অষ্টম |
আটই |
৯ |
নয় |
নবম |
নউই |
১০ |
দশ |
দশম |
দশই |
১১ |
এগার |
একাদশ |
এগারই |
১২ |
বার |
দ্বাদশ |
বারই |
১৩ |
তের |
ত্রয়োদশ |
তেরই |
১৪ |
চৌদ্দ |
চতুর্দশ |
চৌদ্দই |
১৫ |
পনের |
পঞ্চদশ |
পনেরই |
১৬ |
ষোল |
ষষ্ঠদশ |
ষোলই |
১৭ |
সতের |
সপ্তদশ |
সতেরই |
১৮ |
আঠার |
অষ্টাদশ |
আঠারই |
১৯ |
উনিশ |
ঊনবিংশ |
উনিশই |
২০ |
বিশ |
বিংশ |
বিশে |
২১ |
একুশে |
একবিংশ |
একুশে |
*ছকটা ভালো করে দেখে কোনটি কোন শব্দ তা মনে রাখা জরুরি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের প্রশ্ন
- ‘চৌঠা’ কোন বাচক শব্দ (ঘ-২০০৯-১০)