প্রারম্ভিক আলোচনা:
এই অধ্যায় থেকে সাধারণত কোন প্রশ্ন আসেই, তাই কোষ বিভাজনের বিভিন্ন ধাপ সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা প্রয়োজন।
অধ্যায় সারবস্তু:
১. কোষ বিভাজন তিন প্রকার: যথা- ক) অ্যামাইটোসিস, খ) মাইটোসিস, গ) মিয়োসিস
২. ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট প্রভৃতিতে অ্যামাইটোসিস ঘটে।
৩. নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে ক্যারিওকাইনেসিস এবং সাইটোপ্লাজমের বিভাজনকে সাইটোকাইনেসিস বলা হয়।
৪. মাইটোসিস কোষ বিভাজনে নতুন দুইটির কোষের প্রত্যেকটিতে ক্রোমোসোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোসোম-এর সংখ্যার সমান। মাতৃকোষের ক্রোমোসোম দ্বিগুণ হয়ে দুইটি নতুন কোষে সমভাবে বণ্টিত হয়, তাই ক্রোমোসোম সংখ্যা একই থাকে।
৫. কোষ বিভাজনের প্রস্তুতিকালীন সময়কে ইন্টারফেজ বলে, এটি ৯০ - ৯৫% সময় নেয়, আর মাইটোসিস ঘটতে সময় লাগে ৫ – ১০% ।
৬. ইন্টারফেজের S দশায় DNA অণূর নতুন প্রতিলিপি গঠিত হয়। এর আগে ও পরে G 1 এবং G2 দশা থাকে।
৭. প্রোফেজ দশায় ক্রোমোসোম লম্বালম্বি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে দু’টো করে ক্রোমাটিড উৎপন্ন করে।
৮. প্রোমেটাফেজ পর্যায়ে স্পিন্ডল যন্ত্র-এর আবির্ভাব ঘটে।
৯. মেটাফেজ-এ নিউক্লিয়ার মেমব্রেন ও নিউক্লিওলাসের সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটে।
১০. মেটাফেজ দশাতে ক্রোমোসোমগুলো সবচেয়ে মোটা ও খাটো দেখায়।
১১. অ্যানাফেজ দশায় সেন্ট্রোমিয়ার দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় ও ক্রোমাটিডগুলো আলাদা হয়ে দুই মেরুর দিকে যেতে থাকে।
১২. মিয়োসিস কোষ বিভাজনে দুইবার নিউক্লিয়াস বিভাজিত হলেও ক্রোমোসোম মাত্র একবার বিভাজিত হয়, ফলে নতুন সৃষ্ট কোষে ক্রোমোজোমের সংখ্যা কমে অর্ধেক হয়ে যায়।
(মাইটোসিস ও মিয়োসিস-এর মাঝে কনফিউশন হতে পারে। তাই যত্ন করে মনে রাখা প্রয়োজন। অ্যামিয়োসিস বলে কিছু নেই, কিন্তু অ্যামাইটোসিস বলে একটা টার্ম আছে, এভাবে মনে রাখা যেতে পারে)
১৩. নিম্নশ্রেণির জীব যারা হ্যাপ্লয়েড, তাদের জাইগোট ডিপ্লয়েড। ডিপ্লয়েড জাইগোট-এ মিয়োসিস ঘটায় আবার হ্যাপ্লয়েড অবস্থা ফিরে আসে।
১৪. ডিপ্লয়েড জীবে হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট সৃষ্টি হয় মিয়োসিস প্রক্রিয়ায়।
(2n কোষ থেকে n কোষ হয়, এখানে কোষ দুইবার বিভাজিত হয়ে চারটি কোষ উৎপন্ন করে, কিন্তু 2n ক্রোমোজোম একবার বিভাজিত হয়ে 4n সংখ্যক ক্রোমোজোম তৈরি করে। ফলে চারটি কোষের প্রত্যেকটিতে ক্রোমোসোম সংখ্যা n হয়ে যায়)
১৫. মিয়োসিস-এর প্রোফেজ-১ কে পাঁচটি উপদশায় ভাগ করা হয়েছে। যথা:
- লেপ্টোটিন
- জাইগোটিন
- প্যাকাইটিন
- ডিপ্লোটিন
- ডায়াকাইনেসিস
(এই পাঁচটি উপদশার নাম একটু কনফিউজিং হতে পারে। প্রথম চারটির শেষে “টিন” আছে, কিন্তু শেষেরটা অন্যরকম শব্দ, ডায়াকাইনেসিস। আর ডিপ্লো=ডাবল, জাইগো=জোড়া। এরা জোড় স্থানে, ৪র্থ ও ২য় স্থানে। প্রথমে লেপ্টোটিন, আর মাঝে প্যাকাইটিন। এভাবে মনে রাখা যেতে পারে যাতে কখনও কনফিউশন না হয়।)
১৬. সমসংস্থ / হোমোলোগাস ক্রোমোজোম গুলো জাইগোটিন (জাইগো=জোড়া) পর্যায়ে নিজেদের মদ্যে জোড় বাধে। জোড় বাধার এ পদ্ধতিকে “সাইন্যাপসিস” বলে, আর জোড়াকে বলা হয় “বাইভ্যালেন্ট”।
১৭. প্যাকাইটিন (pachys = পুরু) পর্যায়ে ক্রোমোসোমগুলো দ্বিখণ্ডিত হয়ে প্রতিটি বাইভ্যালেন্টে-এ ৪ টা ক্রোমাটিড সৃষ্টি করে (পুরু হয়ে যায়)।
১৮. প্যাকাইটিন দশায় নন-সিস্টার ক্রোমাটিডের মধ্যে কায়াজমা সৃষ্টি হয়। কায়াজমাতে ক্রসিং ওভার হয়।
১৯. ক্রসিং ওভারের ফলে ক্রোমাটিডের যে বিনিময় ঘটে, এতে জীনগত প্রকরণ (Genetic Variation) এর উদ্ভব ঘটে।
২০. মিয়োসিস-এর মেটাফেজ-১ –এ সেন্ট্রোমিয়ার বিভক্ত হয় না, জোড়া ক্রোমাটিড বাইভ্যালেন্ট রূপে মেরুর দিকে যায়, কিন্তু মাইটোসিস-এর মেটাফেজ-এ একক ক্রোমাটিড মেরুর দিকে যায়, সেন্ট্রোমিয়ার বিভক্ত হয়ে দুই বিপরীত মেরুর দিকে যাওয়া ক্রোমাটিডের সঙ্গী হয়।
২১. টিউমার, ক্যান্সারের কারণ অনিয়ন্ত্রিত মাইটোসিস।