ছবি

পরিবর্তিত ওয়েবসাইটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

ঢাবির স্নাতক (সম্মান) ভর্তির নতুন ওয়েবসাইট: (http://admission.eis.du.ac.bd)। এর মাধ্যমেই এবারের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলে কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিস সূত্রে জানা গেছে।

১২-০৯-২০১৩  দুপুর ১২ টা ০৮ মিনিটে পুরাতন সিনেট ভবনের সম্মেলন কক্ষে ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ স ম আরেফিন সিদ্দিক ভর্তি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধন শেষে ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক হাসিবুর রশীদ অনলাইন ভর্তি কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক উপস্থিত সবার সামনে তুলে ধরেন।

তিনি জানান, এ বছর অনলাইন ভর্তি কার্যক্রমে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হচ্ছে,

১) আবেদনকারী শুধু একবার লগইন করে আবেদনযোগ্য সব ইউনিটে আবেদন করতে পারবেন।

২) বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভার্সনে আবেদন করা যাবে।

৩) অনলাইনের মাধ্যমে আবেদনকারীর ছবি এবার আগেই নিয়ে নেওয়া হবে। টাকা জমাদানের রশিদে নতুন করে ছবি সংযুক্ত করতে হবে না।

৪) আবেদনকারীকে নিজস্ব মোবাইল ফোন থেকে এসএমএস করে ফিরতি এসএমএসে একটি কনফারমেশন কোড নিতে হবে। প্রাপ্ত কনফারমেশন কোডটি সঠিকভাবে দিয়ে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।

এই ব্যবস্থার মাধ্যমে আবেদনকারী কোন অপ্রত্যাশিত ছবি দিয়ে থাকলে, ব্যবহৃত মোবাইলের সূত্র সহজে ধরা যাবে। যা আবেদন প্রক্রিয়ার যেকোন ধরনের অপব্যবহার রোধে সহায়তা করবে।

৫) আবেদনকারী একটি মাত্র পেজ থেকে তার আবেদনকৃত সব ইউনিটের সর্বশেষ অবস্থা/অবস্থান( apply, payment status, admit card, seat plan, result) জানতে পারবেন।

৬) এবারই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আবেদনকারীর ব্যক্তিগত মোবাইলে এসএমএসে’র মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য (ব্যাংকে টাকা জমা হলে তার তথ্য, পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন হলে তার তথ্য ইত্যাদি) যথাসময়ে জানানো হবে।

৭) সিটপ্ল্যান নির্ধারণের পর ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রের অবস্থান ওয়েবসাইটে- প্রদত্ত ম্যাপে দেখতে পাওয়া যাবে।

শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে বারবার সতর্ক  করে দেওয়া হয়েছে তারা যেন নিজের অথবা তাদের অভিভাবকদের ফোন নম্বর ব্যবহার করেন। তাতে সব তথ্য সঠিক সময়ে পাওয়া সহজ হবে। তবে অসদুপায় অবলম্বনের জন্য কেউ ভুয়া নম্বর ব্যবহার করলে তাকেও শনাক্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন সূত্রে জানা গেছে, ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনলাইনে প্রাথমিক আবেদন ফি জমা দেওয়ার পে-স্লিপ সংগ্রহ করা যাবে।

১২ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনলাইন থেকে পে-স্লিপ ডাউনলোড করে  রাষ্ট্রায়ত্ব (সোনালী, রুপালী, জনতা, অগ্রণী) যে কোনো ব্যাংকে আবেদনপত্রের আবেদন করার জন্য নির্ধারিত টাকা জমা দিতে হবে। আবেদনকারীকে অবশ্যই ১০ অক্টোবরের মধ্যে নিজের  ছবি আপলোড করে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় তার আবেদনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।

প্রশাসনিক ভবন সূত্রে আরও জানা গেছে, যেসব শিক্ষার্থী ২০১৩ ও ২০১২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক অথবা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে কেবল তারাই ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করতে পারবে। তবে প্রার্থীকে অবশ্যই ২০০৮ বা তার পরবর্তী সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

অন্যদিকে, ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া কোনো শিক্ষার্থী বিভাগ পরিবর্তনের জন্য এবারের ভর্তি-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চাইলে তাকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান বা ইনস্টিটিউটের পরিচালকের কাছ থেকে ভর্তি-পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য লিখিত অনুমতি নিতে হবে।

২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে পাঁচটি ইউনিটের মাধ্যমে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। ইউনিটগুলো হচ্ছে ক-ইউনিট (বিজ্ঞান), খ-ইউনিট (কলা অনুষদ), গ- ইউনিট (ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ), ঘ-ইউনিট (সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ) এবং চ-ইউনিট (চারুকলা অনুষদ)।

উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক-ইউনিট, মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা খ ইউনিট, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা গ-ইউনিটের মাধ্যমে পরীক্ষা দিয়ে নিজ নিজ বিভাগের বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে।
তবে কেউ যদি উচ্চ মাধ্যমিকে পঠিত বিষয়গুলোতে উচ্চ শিক্ষা নিতে আগ্রহী না থাকে তবে তাকে ঘ-ইউনিটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।

ঘ- ইউনিটের মাধ্যমে পরীক্ষা দিলে নিজ নিজ অনুষদের বিষয়গুলো ছাড়া মেধাতালিকা অনুযায়ী অন্য যে কোনো অনুষদের বিষয়ে ভর্তি হওয়া যাবে।

আবেদনের যোগ্যতা: উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা ক ইউনিটের মাধ্যমে মানবিক বিভাগ থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা খ-ইউনিটের মাধ্যমে এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীদের গ-ইউনিটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয় ছাড়া মোট জিপিএ ক-ইউনিটের জন্য ৮, খ-ইউনিটের জন্য ৭ এবং গ-ইউনিটের জন্য ৭.৫ থাকতে হবে।

তবে চ-ইউনিটে যেকোনো বিভাগ থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে।

এক্ষেত্রে তাদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয় ছাড়া মোট জিপিএ’র প্রয়োজন হবে ৬.৫।

ঘ-ইউনিটের মাধ্যমে সব বিভাগ থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরাই পরীক্ষা দিতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে নিজ নিজ অনুষদের ইউনিটে আবেদনের জন্য ন্যূনতম জিপিএ’র শর্ত পূরণ করলে তবেই ঘ-ইউনিটে আবেদনের যোগ্য বিবেচিত হবে।

সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী ১ নভেম্বর ঘ-ইউনিট, ১৫ নভেম্বর গ-ইউনিট, ২২ নভেম্বর ক-ইউনিট এবং ২৩ নভেম্বর চ-ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে অনিবার্য কারণে পরীক্ষার সময় স‍ূচি পরিবর্তন হতে পারে।