পর্যায় সারণী

একই ধরনের ধর্মবিশিষ্ট মৌলসমূহকে একই শ্রেণিভুক্ত করে, আবিষ্কৃত সব মৌলকে স্থান দিয়ে মৌলসমূহহের যে সারণী বর্তমানে প্রচলিত, তাকে মৌলের পর্যায় সারণী বলে।

বিজ্ঞানী মেন্ডেলিফকে পর্যায় সারণীর জনক বলে। তিনি পর্যায় সূত্র আবিষ্কার করেন।

• নিউল্যান্ডের অষ্টক সূত্র : ১৮৬৪ সালে ইংরেজ বিজ্ঞানী জন নিউল্যান্ডস লক্ষ্য করেন, ‘মৌলসমূহকে তাদের পারমাণবিক ভরের ক্রম অনুসারে সাজালে দেখা যায়, যেকোনো মৌল থেকেই শুরু করে অষ্টম মৌলে ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের পুনরাবৃত্তি করে।’ সঙ্গীতের স্বরলিপির সাতটি স্তরের পুনরাবৃ্ত্তির (সা রে গা মা পা ধা নি সা) সঙ্গে মিল দেখে নিউল্যান্ডস এ সূত্রের নাম দেন অষ্টক সূত্র।

• ডোবেরিনায়ের ত্রয়ী সূত্র : ১৮২৯ সালে ডোবেরিনায়ের মৌলসমূহকে সাজানোর জন্য ত্রয়ী সূত্র নামে একটি সূত্র প্রদান করেন। এই সূত্র অনুসারে রাসায়নিক ধর্মে সাদৃশ্য পূর্ণ তিনটি করে মৌলকে সাজিয়ে নিলে দেখা যায় যে, উক্ত মৌল তিনটির পারমাণবিক ভর নিয়মানুসারে পরিবর্তিত হয় এবং এই তিনটি মৌলের মধ্যমটির পারমাণবিক ভর প্রথম ও তৃতীয় মৌলের পারমাণবিক ভরের গড় মানের প্রায় সমান অথবা সমান। যেমন-

• পর্যায় সারণীর প্রথম পর্যায়ে মাত্র দুটি মৌল হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম আছে।
• পর্যায় সারণীতে ৭টি পর্যায় এবং ৯টি শ্রেণি আছে।
• বিজ্ঞানী নিউল্যান্ডস ১৮৬৪ সালে নিউল্যান্ডের অষ্টক সূত্র প্রদান করেন।
• $\mathrm{GeO}_{2}$ আপেক্ষিক গুরুত্ব $4.7$ এবং $\mathrm{GeCl}_{4}$ এর স্ফুটনাংক $86°C$
• ধাতু হবার কারণে $\mathrm{IA}$ মৌলগুলো তাপ ও বিদ্যুৎ সুপরিবাহী।
• $\mathrm{IA}$ মৌলসমূহ রৌপ্য বর্ণের ও উজ্জ্বল।
• ইলেক্ট্রন বিন্যাস অনুযায়ী মৌলসমূহকে ৪টি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়-

১. $\mathrm{s}$– ব্লক মৌল; উদাহরণ- $\mathrm{H}, \mathrm{He}, \mathrm{Li}$

২. $\mathrm{p}$– ব্লক মৌল; উদাহরণ- $\mathrm{Al}, \mathrm{Ar}$

৩. $\mathrm{d}$– ব্লক মৌল; উদাহরণ- $\mathrm{Sc}, \mathrm{Zn}, \mathrm{Cd}$

৪. $\mathrm{f}$– ব্লক মৌল; উদাহরণ- $\mathrm{Ac}, \mathrm{As}$ 

• মৌলের ধর্মাবলী মৌলের পারমাণবিক সংখ্যানুসারে পর্যায়ক্রম আবর্তিত হয়।
• মৌলের স্ফুটনাংক পর্যায়ক্রম পরিবর্তিত হয়।
• $\mathrm{f}$-ব্লক মৌলসমূহকে আভ্যন্তরীণ অবস্থান্তর মৌল বলে।
• মৌলের আয়নিকরণ বিভব একটি পর্যায়বৃত্তিক ধর্ম।

পর্যায় সারণীর ত্রুটি 

• মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণীর ত্রুটি 

১. পারমাণবিক ভর অনুসারে সজ্জিতকরণে ত্রুটি

২. মৌলের অবস্থানের সঙ্গে ধর্মের অসামঞ্জস্যতা

• আধুনিক পর্যায় সারণীর ত্রুটি 

১. হাইড্রোজেনের অবস্থান

২. অষ্টম শ্রেণির অসামঞ্জস্যতা

৩. ল্যান্থানাইড ও অ্যাক্টিনাইড সারির অবস্থান

• ল্যান্থানাইড বর্গকে বিরল মৃত্তিকা মৌল বলে।
  ক্ষারধাতুগুলির সর্ব বহিঃস্তরে ১টি মাত্র ইলেক্ট্রন থাকে।
• $\mathrm{IIA}$ শ্রেণির মৌলগুলিকে মৃৎক্ষার ধাতু বলে।
• মৃৎক্ষার ধাতুর সর্ব বহিঃস্তরে ২টি ইলেক্ট্রন দ্বারা $\mathrm{s}$ অরবিটাল পূর্ণ থাকে।
• পর্যায় সারণীতে নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলির অবস্থান শূন্য শ্রেণিতে।
• $\mathrm{Al}$ এর গলনাংক $\mathrm{Na}$ অপেক্ষা বেশি।
• ক্ষার ধাতুগুলি পর্যায় সারণীতে $\mathrm{IA}$ শ্রেণিতে অবস্থিত।
• একই শ্রেণির উপর হতে নিচের দিকে আয়নিকরণ শক্তি কমে যায়।
• একই পর্যায়ের বাম হতে ডান দিকে ক্রমান্বয়ে আয়নিকরণ শক্তি বৃদ্ধি পায়।
• হ্যালোজেনসমূহ পর্যায় সারণীর $\mathrm{VIIA}$ শ্রেণিতে অবস্থিত।